This post is also available in: English (ইংরেজি) हिन्दी (হিন্দি) বাংলা
আপনার বাচ্চাকে প্রথমবার সলিড খাবারের স্বাদ দেওয়া একটি বড় পদক্ষেপ। বেশিরভাগ শিশুই 6 মাস বয়সে বুকের দুধ বা ফর্মুলা ফিডিংয়ের পরিপূরক হিসেবে শক্ত জিনিস খাবার খাওয়া শুরু করতে প্রস্তুত হয়। আপনার শিশুর সলিড খাবার খাওয়া চালু করার জন্য আপনার যা জানা দরকার তা এখানে দেওয়া হল।
আমার বাচ্চা শক্ত খাবারের জন্য প্রস্তুত কিনা তা আমি কীভাবে বুঝতে পারব?
বাচ্চারা সাধারণত শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করতে প্রস্তুত থাকে যখন তারা কোনও জিনিসের সাহায্যে সোজা হয়ে বসতে পারে, তাদের মাথা এবং ঘাড়ের উপর ভালো নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে এবং খাবার খাওয়ার সময় হলে সামনের দিকে ঝুকে ও মুখ খুলে খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখায়।
প্রথমে কোন খাবার দিয়ে শুরু করা উচিত?
এমন কোনও খাবার দিয়ে শুরু করুন যাতে মাত্র 1টি উপাদান থাকে এবং সেটি ভালোভাবে ভর্তা করা হয়। বেশিরভাগ মাতাপিতাই শিশুদের খাদ্যশস্য়, ফল বা সবজি দিয়ে শুরু করেন। আপনি বুকের দুধ, ফর্মুলা বা জলের সাথেও শিশুদের সেরিয়াল বা খাদ্যশস্য মিশিয়ে দিতে পারেন। মিশ্রণটিকে প্রথমে পাতলা করুন এবং তারপর একটি চামচ ব্যবহার করে এটি আপনার শিশুকে খাওয়ান। আধা-কঠিন খাবারের জন্য বোতল ব্যবহার না করাই ভালো। চামচ দিয়ে খাওয়ানো আপনার শিশুর মুখের পেশির নড়াচড়া এবং গিলে খাওয়ার মধ্যে সমন্বয় করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে তার কথা বলার ক্ষমতার বিকাশেও সাহায্য করে।
আপনি যখন আপনার শিশুকে সলিড খাবার খাওয়ানো শুরু করছেন, তখন প্রতি 3-4 দিনে আপনার শিশুকে 1টি করে নতুন খাবার দিন। এইভাবে, আপনার শিশু নতুন নতুন খাবারের স্বাদের বিকাশের জন্য যথেষ্ট সময় পায়। এইভাবে সহজেই আপনি আপনার শিশুর কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে তাও খুঁজে বের করতে পারবেন। কয়েক দিন পরে, আপনি অন্য খাবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
প্রাথমিকভাবে খাবারগুলি পাতলা হওয়া উচিত এবং সময়ের সাথে সাথে তা আরও ঘন করা যেতে পারে। প্রথমদিকে স্তন্যপান করানোর পরে খাদ্যশস্য বা সেরিয়াল (যেমন পাতলা ডাল বা পাতলা চালের স্যুপ) অল্প পরিমাণে (এক চা চামচ [5 মিলি]) চামচের দ্বারা দেওয়া উচিত। আপনি ধীরে ধীরে সেরিয়ালের পরিমাণ এক থেকে চার টেবিল চামচ (15 থেকে 60 মিলি) করতে পারেন এবং দিনে দু’বার দিতে পারেন।
এরপরে আমার বাচ্চাকে কোন ধরণের খাবার দেওয়া উচিত?
প্রথমদিকে শুধুমাত্র 1টি উপাদান সহ বিভিন্ন খাবার দেওয়ার পর, আপনি 2 বা তার বেশি উপাদান যুক্ত খাবার ট্রাই করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি চটকে দেওয়া ফলের সাথে দই মিশিয়ে দিতে পারেন। সময়ের সাথে সাথে, আপনি আপনার শিশুকে এমন খাবার দিতে পারেন যা পুরু এবং যাতে ছোট ছোট টুকরো আছে, যেমন ফল/রুটি/পাস্তা বা নরম পনিরের টুকরো। এইভাবে, আপনার শিশু বিভিন্ন খাবারে অভ্যস্ত হতে পারে এবং খাবারের টুকরো চিবানো শিখতে পারে।
আমার বাচ্চার কোনও খাবারে অ্যালার্জি আছে কিনা তা আমি কীভাবে বুঝবো?
আপনার শিশুর কোনও খাবারে অ্যালার্জি আছে বুঝবেন যদি দেখেন যে সে কোনও খাবার খাওয়ার পরে তার মধ্যে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলির মধ্যে 1 টি বা তার বেশি দেখা যাচ্ছে- ত্বকে ফুসকুড়ি বা ফুলে যাওয়া, ত্বকে লাল দাগ যা সাধারণত খুব চুলকায় (যাকে আমবাত বলা হয়), ঠোঁট বা মুখ ফোলা, বমি বা ডায়রিয়া, কাশি বা শ্বাসকষ্ট।
আপনার সন্তানের যদি এই উপসর্গগুলির মধ্যে কোনোটি দেখা দেয় তবে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান।
আমি কি নিজের বাচ্চার খাবার নিজেই তৈরি করতে পারি?
হ্যাঁ, বিভিন্ন কারণের (যেমন, সতেজতা, বর্ধিত বৈচিত্র্য এবং গঠন, খরচ, প্রিজারভেটিভ এড়ানো) জন্য আপনার বাচ্চার খাবার নিজে হাতে তৈরি করা সবসময়ই ভালো। বাচ্চাদের খাবারে অতিরিক্ত লবণ বা চিনিরও প্রয়োজন হয় না তাই আপনার এগুলি যোগ করারও দরকার নেই। শিশুর জন্য খাবারকে আরও সুস্বাদু করতে আপনি কিছু ভেষজ, মশলা এবং লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
এমন কোনও খাবার আছে কি যা শিশুদের খাওয়া বা পান করা উচিত নয়?
হ্যাঁ, 1 বছরের কম বয়সী শিশুদের গরুর দুধ পান করা বা মধু খাওয়া উচিত নয়। 12 মাসের কম বয়সী যেকোনো শিশুর কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যার মধ্যে শক্ত, গোলাকার খাবার রয়েছে যা গলায় আটকে দম বন্ধ করতে পারে (যেমন, বাদাম, আঙ্গুর, কাঁচা গাজর, বা মিছরি) এবং মধু।
আমি কি আমার বাচ্চাকে জুস খাওয়াতে পারি?
আপনি আপনার শিশুর 1 বছর বয়সের পরে একটি কাপে তাকে জুস বা রস দিতে পারেন। তবে অত্যাধিক পরিমাণ জুস দেওয়ার চেষ্টা করবেন না কারণ এটি ডায়রিয়া এবং দাঁতে ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। এর পরিবর্তে চটকে দেওয়া ফল বা বিশুদ্ধ ফল দেওয়া যেতে পারে এবং তারপরে যখন প্রায় 9 মাস বয়সে আপনার বাচ্চা চিবানো শুরু করে তখন ছোট ছোট করে কাটা ফল দেওয়া ভালো।
বাচ্চারা কখন নিজে থেকে খেতে পারে?
শিশুরা সাধারণত 8 থেকে 10 মাস বয়সের মধ্যে নিজেরা খাবারের টুকরো তুলে নিজে থেকে খাওয়া শুরু করতে পারে। সূক্ষ্মভাবে কাটা, নরম খাবার বা “ফিঙ্গার ফুডস” সহ আরও অনেক ধরনের “প্রাপ্তবয়স্কদের” খাবার দেওয়া যেতে পারে।
আমার সন্তানের কি ভিটামিনের প্রয়োজন?
চিকিৎসকরা সুপারিশ করেন যে সমস্ত শিশুর 1 বছর বয়স পর্যন্ত ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও, প্রি-টার্ম শিশুদের ক্ষেত্রে আয়রন, মাল্টি-ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্টেরও প্রয়োজন হতে পারে। এগুলির ডোজ একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা নিশ্চিত করা আবশ্যক।
কত বয়স পর্যন্ত আমার বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যাওয়া উচিত?
মায়েদের উচিত তাদের বাচ্চাদের অন্তত এক বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো, ফর্মুলা বা পশুর দুধের তুলনায় বুকের দুধের অগণিত এবং অতুলনীয় সুবিধার কথা মাথায় রেখে তাদের এটি করা উচিত। অনেক মা-ই তাদের বাচ্চাদের দুই বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ান। এটি ভালো কারণ এর ফলে শিশুটি তাড়াতাড়ি গরুর দুধের সংস্পর্শে আসা থেকে দূরে থাকে এবং এটি সাথে সাথে এও নিশ্চিত করে যে শক্ত খাবার শুরু করার পরেও শিশুরা বুকের দুধের সমস্ত সুবিধা পাচ্ছে।
লিখেছেন
ডাঃ শ্রেয়া শর্মা
This post is also available in: English (ইংরেজি) हिन्दी (হিন্দি) বাংলা